মুদ্রাস্ফীতি সারা বিশ্বকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। বেড়েছে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা। এই কঠিন সময়ে সোনার বাজারে দাম বাড়ার নানা রকম কারণ রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তাদের সোনার ভাণ্ডার বাড়িয়ে তুলছে। কিন্তু এই সমস্ত কারণ থাকা সত্ত্বেও সোনার দাম কমছে। গত ২ সপ্তাহে প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ৮০০ টাকারও বেশি।
কম দাম এবং বিনিয়োগের পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও সোনার এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডগুলি তাদের রিজার্ভ থেকে সোনা বিক্রি করছে। মে, জুন, জুলাই মাসে বিশ্বজুড়ে এই ফান্ডগুলি সোনা বিক্রি করেছে। চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত গোল্ড ETF-গুলিতে ৩ হাজার ৮৪৭ টন সোনার মজুত ছিল। কিন্তু জুলাইয়ের শেষ নাগাদ এই সোনার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭০৮ টন। এর মধ্যে জুলাই মাসে বিক্রি হয়েছে ৮১ টন।
সোনার ETF বিক্রি হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি এর সুবিধা নিয়ে তাদের সোনার ভাণ্ডার বাড়িয়েছে। জুলাই মাসে ১৩.৪ টন সোনা কিনেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। এর ফলে RBI-এর মোট সোনার মজুত দাঁড়িয়েছে ৭৮৩.১ টনে, যা একটি রেকর্ড।
শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নয়, স্পট মার্কেটেও সোনার চাহিদা বেড়েছে। প্রধান স্বর্ণ রপ্তানিকারকদের মধ্যে সুইজারল্যান্ড জুলাই মাসে সোনার সবচেয়ে বড় গ্রাহক চিনে ৮০ টন সোনা রপ্তানি করেছে। গত ৫ বছরের মধ্যে এটি সুইজারল্যান্ড থেকে চিনে সবচেয়ে বড় রপ্তানির ঘটনা।
কিন্তু সারা বিশ্বে চিন ও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এত কেনাকাটা সত্ত্বেও সোনার দাম না বেড়ে কমছে। এর জন্য ডলারের দাম বৃদ্ধি একটি কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উপদেষ্টা সংস্থা অগমন্টের রিসার্চ হেড রেনিশা চাইনানি বলেন, এই বছর মুদ্রাস্ফীতি ও শ্লথ আর্থিক বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ডলার আরও ভালো বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে। এই কারণে ডলারের দাম বেড়েছে। একই কারণে গোল্ড ETFগুলি সোনা বিক্রি করছে এবং ডলারে তাদের বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে সোনার দাম বাড়তে পারে বলে মনে করেন রেনিশা। এই কারণে সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি তাদের সোনার মজুত বাড়াচ্ছে।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, আর্থিক অস্থিরতার সময় সোনার দাম বেড়ে থাকে। তাই এবারও আশা করা হচ্ছে যে মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়লে দীর্ঘমেয়াদে দাম আবার বাড়বে।
Published: September 30, 2022, 12:47 IST
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App