প্রদেয় ঋণ বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণের মাত্রা হ্রাস, সম্পদের গুণমানে উন্নতি এবং অর্জিত সুদের মার্জিন বৃদ্ধি সাম্প্রতিককালে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির স্বাস্থ্য তুঙ্গে পৌঁছে দিয়েছে। এটা সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু এই ভালো সময় কি আগামী দিনে চালু থাকবে?
বহুজাতিক উপদেষ্টা সংস্থা ম্যাকিনসে জানিয়েছে আমানত বৃদ্ধির ধীরগতি, পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং সুদের আয়ের সম্ভাব্য হ্রাস-সহ একাধিক চ্যালেঞ্জের সাথে পরবর্তী দুই বছর ততটা মসৃণ হবে না। এ কথা জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
ম্যাককিনসে বলেছে যে ব্যাঙ্কিং শিল্পের জন্য সম্পদের উপর রিটার্ন (return on assets) যা FY23 এ 1.1% ছিল তা FY25 এর মধ্যে 0.80-1.0%-এ নেমে আসতে পারে।
ভারতের ব্যাঙ্কগুলি অন্যান্য দেশে নিজেদের সমকক্ষ ব্যাঙ্কের তুলনায় সম্পদের উপর উচ্চ রিটার্ন (ROA) অর্জন করতে পেরেছে যা উচ্চ price to book (P/B) multiple-এর সাথে মূল্যায়ন বাড়িয়ে দিয়েছে। FY23-এ ভারতের শীর্ষ তিনটি ব্যাঙ্কের P/B multiple 2.5। কিছু বড় দেশের ব্যাঙ্কগুলির জন্য এই মাত্রা 0.5-1.5 ব্যান্ডে ঘোরাফেরা করে।
ম্যাকিনসে FY19 এর শুরু থেকে 80টি ব্যাঙ্কের কর্মদক্ষতা পরীক্ষা করে এবং “ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস: বিল্ডিং রেসিলিয়েন্ট লিডারশিপ” শিরোনামের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে যে ঋণের ব্যয় হ্রাস এবং স্বাস্থ্যকর নেট সুদের মার্জিন-সহ বিভিন্ন কারণে গত এক দশকে ব্যাংকগুলি সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে।
সংস্থাটি উদ্বেগের জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করেছে। তারা বলেছে যে দেশের পরিবারগুলি ব্যাঙ্কের আমানত ছাড়াও অন্যত্র সঞ্চয় বিনিয়োগ করতে পারে। এটি মুদ্রাস্ফীতির উপর ঊর্ধ্বমুখী চাপের আশঙ্কা করেছে। বলেছে যে দুটি কারণ একত্রিত হয়ে ব্যাঙ্কগুলির জন্য তহবিলকে ব্যয়বহুল করে তুলতে পারে যা তাদের লাভের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মানবসম্পদের বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলি ক্রমাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। নতুন যাঁরা কাজে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা ইতোমধ্যেই বেশি বেশি চাকরি ছাড়ছেন. দক্ষ কর্মী ধরার প্রতিযোগিতার জন্য প্রতিযোগিতা মানবসম্পদ বিভাগে ব্যয় বাড়াবে।
অপারেশনাল ফ্রন্টে, ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলি ডেটা সুরক্ষা এবং গোপনীয়তার বিষয়গুলি নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিতে লগ্নি করতে হবে।
“কার্যক্ষমতা উন্নত করতে, মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে আরো বেশি। গ্রামীণ খাতে ডিজিটাল কমার্স ফোকাস করতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকেবলেই মন্তব্য করেছেন ম্যাকিনসের অংশীদার পিয়ুষ ডালমিয়া।
আরেক ফ্রন্টে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। বিশেষ করে ফি আয়ের জন্য ফিনটেক কোম্পানিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণে ভারতে ব্যাঙ্কগুলি ফি হ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে৷
ডালমিয়া আরও বলেছিলেন যে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিকে প্রযুক্তিতে ব্যয় বাড়াতে হবে মোট আয়ের 9-10% মাত্রায়। বর্তমান যা 5-7%।
কনসালটেন্সি ফার্ম আশা করে যে ব্যাঙ্কের প্রদেয় ঋণ ভালো হরে বাড়বে. 12-14% CAGR হারে তা বজায় থাকবে। তবে ঋণ প্রদানকারী ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ বৃদ্ধির জন্য টিয়ার 2 এবং টিয়ার 3 শহরে ফোকাস করতে হবে। ম্যাককিনসে অনুমান করে যে ব্যক্তিগত ঋণের জন্য গ্রাহকদের প্রায় 80% টিয়ার 2 থেকে আসে ছোট শহরগুলি থেকে। 2018 সালে তা ছিল 70%-এর মত।
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App