রাস্তায় ভেন্ডর বা হকারদের জন্য সরকার যে ঋণ দিয়ে থাকে তার 41% মহিলা আর এর অধিকাংশই নিয়েছেন দক্ষিণের রাজ্যগুলির মহিলারা। এই ঋণ প্রকল্পের পোশাকি নাম PM Street Vendors’ AtmaNirbhar Nidhi।
COVID-19 এর জন্য দেশে রুটি-রুজির যে দুরাবস্থা হয়েছিল তার আংশিক নিরসন করতেই চালু করা হয়েছিল এই প্রকল্পের। গত 1 জুন এই প্রকল্পের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, এই প্রকল্পের মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যা 36.33 লক্ষ। এঁদের মধ্যে 21.31 লক্ষ পুরুষ এবং 15.02 লক্ষ মহিলা। “অন্যান্য” লিঙ্গ শ্রেণীতেও 219 জন সুবিধাভোগীও রয়েছেন।
উল্লেখ্য, যে সব রাজ্যে সুবিধাভোগীদের সংখ্যাগরিষ্ঠই মহিলা, তার প্রায় সবকটি দেশের দক্ষিণ এবং উত্তর-পূর্ব ভাগে অবস্থিত। এই ধরণের রাজ্যের সংখ্যা 10টি। এর মধ্যে রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ (70% মহিলা), তেলেঙ্গানা (66%), তামিলনাড়ু (64%) এবং কর্ণাটক (50%)৷ কেরল হল এর মধ্যে ব্যতিক্রম, কিন্তু এই রাজ্যে কুডুম্বশ্রীর মতো নিজস্ব কর্মসূচি রয়েছে, যার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ণ বৃদ্ধির উদ্যোগ করা হয়েছে। চলতি বছর জুন মাসে এই প্রকল্প 25 বছর পূর্ণ হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকে মহিলা সুবিধাভোগীদের সংখ্যা যোগ করলে দাঁড়ায় 5,80,956। এঁরা দেশের মোট 15,02,597 মহিলা সুবিধাভোগীর প্রায় 39%৷ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও মহিলা সুবিধাভোগীর বিরাট অংশ রয়েছে, তবে মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যাটি খুবই কম।
মণিপুর (94%), নাগাল্যান্ড (88%), মেঘালয় (77%), অরুণাচল প্রদেশ (75%) এবং সিকিমে (58%) মহিলাদের হার খুবই বেশি। আসামেও এই ঋণ যাঁরা নিয়েছেন তাঁদের 47% মহিলা৷ এগুলিতে মহিলাদের অংশীদারিত্ব জাতীয় গড় অর্থাৎ 41%-র চেয়ে অনেক বেশি। ত্রিপুরাই উত্তর-পূর্ব ভারতের একমাত্র রাজ্য, যেখানে মহিলাদের অংশীদারিত্ব মাত্র 12%৷
উত্তরের রাজ্যগুলির মধ্যে বিজেপি শাসিত রাজ্য অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে সর্বাধিক সংখ্যক সুবিধাভোগী রয়েছেন। এই সংখ্যা যথাক্রমে 9.60 লক্ষ এবং 5.41 লক্ষ। এই দুই রাজ্যে মহিলা সুবিধাভোগীর অংশীদারিত্ব 32%। আরজেডি-জেডিইউ-কংগ্রেস শাসিত বিহারে মোট সুবিধাভোগীর মাত্র 27% মহিলা। কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে ঋণপ্রাপ্ত মোট মহিলার সংখ্যা মাত্র 15,861 বা মোট সুবিধাভোগীর 23%।
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ স্ট্রিট ভেন্ডরস অফ ইন্ডিয়ার কর্তা অরবিন্দ সিং বলেছেন যে অনেক ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি মহিলাদের উদ্দেশ্য করেই তৈরী হয়েছিল। “কিছু রাজ্যে, স্থানীয় প্রশাসন মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সহায়তা করার লক্ষ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়া হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, অন্ধ্র প্রদেশ তাদের মিউনিসিপ্যাল এলাকায় দারিদ্র্য দূরীকরণ মিশনে যুক্ত করা হয়েছিল এই প্রকল্পকে,” অরবিন্দ সিং বলেন।
তবে তিনি এটা স্পষ্ট করেছেন যে কিছু রাজ্যে এই প্রকল্পে পুরুষদের তুলনায় মহিলা সুবিধাভোগী বেশি হওয়ার অর্থ এই নয় যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে রাস্তায় পুরুষদের চেয়ে বেশি মহিলা বিক্রেতা আছেন। তাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা বেশি নিয়েছেন।
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App