বৈদ্যুতিক গাড়ি: ব্যাটারির যত্ন নিন

কোনও কোনও EV-তে, গাড়ির দামের 60 শতাংশ হয় ব্যাটারির দাম। বন্যা বা ভারী বৃষ্টিতে ব্যাটারির ক্ষতির আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি।

রমার পক্ষে গাড়ির তেলের জন্য রোজ এত টাকা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই গাড়ি বিক্রি করে তিনি বিদ্যুতিক গাড়ি কিনতে চান। বৈদ্যুতিক গাড়ি চালাতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়ে মাত্র দেড় টাকা। সেখানে পেট্রল বা ডিজেল গাড়িতে খরচ হয় 5 টাকা থেকে 9 টাকা। আর মূলত এই কারণে ভারতে EV-র বিক্রি দ্রুত বাড়ছে।

সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, 2023 সালের প্রথম 9 মাসেই দেশে EV বিক্রির সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত বছর সারা বছরেই হয়ত এই সংখ্যক EV বিক্রি হয়েছিল। দেশে এই মুহূর্তে যত যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে তার 6.4 শতাংশ EV দাঁড়িয়েছে।

ফলে EV কেন এখন সাশ্রয়কারী, তা নিয়ে আর কোনও সংশয় নেই রমার মনে। তবে প্রশ্ন হল EV-র জন্য কোন ধরণের ইনসিওরেন্স কভার নেওয়া প্রয়োজন। পেট্রল-ডিজেলের গাড়ির জন্য বাজার চলতি বিমা ইনসিওরেন্সের তুলনায় এই ধরনের বিমা পলিসির পার্থক্য কী?

এই নিয়ে রমার মনে নানা সংশয় আছে। EV কিনলে রমার কী ধরনের বিমা নেওয়া উচিত? আসুন জেনে নেওয়া যাক।

পেট্রল-ডিজেল গাড়ির বিমার সঙ্গে EV-র বিমার মধ্যে অনেকগুলি মিল আছে।

বাজাজ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের হেড অফ মোটর ডিস্ট্রিবিউশন শুভাশীষ মজুমদার বলেছেন, ‘EV হোক বা পেট্রল-ডিজেল গাড়ি, উভয়ের ক্ষেত্রেই থার্ড-পার্টি বিমা কভার প্রয়োজন। তাই EV কিনলে অবশ্যই একটি কমপ্রিহেনসিভ বিমা পলিসি কেনা প্রয়োজন। আর এতে থার্ড পার্টি ড্যামেজ কভারও যুক্ত থাকা জরুরি।’

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, সাধারণ গাড়ির তুলনায় EV-র দাম অনেকটাই বেশি। আর EV-তে ব্যাটারি একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। গাড়ির মোট দামের অর্ধেকের বেশি হয় ব্যাটারির দাম। ফলে ব্যাটারির বিষয়ে বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। গাড়ির নিরাপত্তা আরও মজবুত করতে বেসিক ইনসিওরেন্স পলিসিতে কিছু রাইডার যোগ করা যেতে পারে।

কোনও কোনও EV-তে, গাড়ির দামের 60 শতাংশ হয় ব্যাটারির দাম। বন্যা বা ভারী বৃষ্টিতে ব্যাটারির ক্ষতির আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি। ব্যাটারিতে বড় ধরনের কোনো ত্রুটি দেখা দিলে মেরামতের চান্সও কম থাকে।

একটি নতুন ব্যাটারি কিনতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়। আর এর সঙ্গে মেরামতের খরচ ধরলে অনেক সময় তা একটি নতুন গাড়ির খরচের সমান হয়ে যায়।

অতএব, ব্যাটারির নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত বিমা কভারেজ থাকা উচিত।

অনেক বিমা কোম্পানি ব্যাটারি প্রোটেকশন রাইডার অফার করে। এইগুলি অবশ্যই বিমা পলিসিতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

গাড়ির বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর ভ্যালুও কমে যায়।

একে বলা হয় ডেপ্রিশিয়েশন ভ্যালু। EV-র ক্ষেত্রে ডেপ্রিশিয়েশন ভ্যালু নির্ধারণের পদ্ধতি এখনও স্পষ্ট নয়।

যদিও, পেট্রল-ডিজেল গাড়ির মূল্য বছরে 10 শতাংশ হ্রাস পায়।

Insured Declared Value বা IDV রাইডার অ্যাড করে আপনি আপনার গাড়ির বিমা কভারেজ বাড়াতে পারেন।

EV-র ক্ষেত্রে Return to Invoice rider একটি ভাল বিকল্প। সেক্ষেত্রে গাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা চুরি হলে বিমা কোম্পানি একটি নতুন গাড়ি কেনার খরচ যোগাবে।

ভারতে EV এখনও খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। তাই EV মেকানিকের সংখ্যাও তুলনামূলক কম। ফলে পথে EV ব্রেক ডাউন হলে বা ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বড় সমস্যায় পড়তে পারেন।

এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে কিছু বিমা কোম্পানি রোড সাইড অ্যাসিস্ট্যান্স নামে একটি অ্যাড-অন কভার অফার করে। বড় সমস্যা এড়াতে এই রাইডার বেসিক পলিসিতে যুক্ত করতে পারেন।

কিছু বিমা কোম্পানি বেস পলিসিতেই বেশ কিছু জরুরি অ্যাড-অন দিয়ে থাকে। আলাদা ভাবে রাইডার যুক্ত করার চেয়ে আগে থেকে যুক্ত থাকা বেস পলিসি নিলে তুলনামূলক কম খরচ হয়।

EV ব্যাটারির ওয়ারেন্টি সাধারণত 3 বছরের হয়। তবে কিছু অটো কোম্পানি দুই বছরের এক্সটেন্ডেড ওয়ারেন্টি অফার করে। কিন্তু এর জন্য অতিরিক্ত টাকা গুণতে হতে পারে। এর সঙ্গে কিছু লোক তাঁদের বাড়িতে চার্জিং স্টেশন ইনস্টল করেন।

EV-র জন্য বিমা পলিসি কেনার সময় ব্যাটারি চার্জ করার জন্য ব্যবহৃত অ্যাক্সেসারিস কভার যুক্ত করার পরামর্শ অনেকে দেন।

বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার আগে রামার এই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলি বিবেচনা করা উচিত।

তাই ইলেকট্রিক কার নেওয়ার আগে রমার এই সমস্ত ফিচার অবশ্যই যুক্ত করা উচিত।

Published: December 11, 2023, 13:57 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App