No Cost EMI: সুবিধা কার?

No- Cost-EMI অফারে গ্রাহকের কাছ থেকে কোনও সুদ নেওয়া হয় না। তাহলে প্রশ্ন হল, এতে ব্যাঙ্ক বা NBFC-র লাভ কী?

উৎসবের মরসুমে সকলেই কমবেশি কেনাকাটা করছেন। অনেকে আবার নতুন শাড়ি-পোশাক-গয়না ইত্যাদি কেনার পাশাপাশি টিভি, ফ্রিজ বা অন্য কোনও আইটেম কেনার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৷ আপনি যখনই কেনাকাটা করেন, তখন অনেক সময় No-Cost EMI apnake অফার করা হয়। যা নিয়মিত EMI-এর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই অপশনের উদ্দেশ্যই হল গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা। যাতে তারা সহজেই কিস্তিতে দামী জিনিস কিনতে পারে।

No- Cost-EMI অফারে গ্রাহকের কাছ থেকে কোনও সুদ নেওয়া হয় না। তাহলে প্রশ্ন হল, এতে ব্যাঙ্ক বা NBFC-র লাভ কী? আসুন বিষয়টি দেখা যাক। আমরা এটাও দেখবো যে No- Cost-EMI- এর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি কী। এই সুবিধাটি ব্যাঙ্ক এবং খুচরো বিক্রেতাদের জন্য উপকারী। কিন্তু গ্রাহকদের জন্য এটি ক্ষতিকর। কেন জানেন?

গ্রাহকের জন্য সুবিধা হল যে তারা একলপ্তে টাকা na diyei কিস্তিতে দামী জিনিস কিনতে পারেন। ব্যাঙ্ক বা NBFC-এর সুবিধা হল তাদের ব্যবসা বৃদ্ধি পায়। তাদের প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট আয় হয়। খুচরো বিক্রেতাদের জন্য সুবিধা হল তাদের বিক্রি বৃদ্ধি পায়।

যখন আপনি একটি পণ্য কেনার জন্য Advance টাকা দেন, খুচরো বিক্রেতা আপনাকে একটি ডিসকাউন্ট দেয়।

মার্জিনের একটি অংশ ব্যাঙ্ক বা NBFC এর সঙ্গে শেয়ার করা হয়, যেটি আপনার পেমেন্ট প্রসেস করেছে। এই বিষয়ে, ট্যাক্স এবং বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ বলবন্ত জৈনের পরামর্শ হল, no-cost EMI -এর ক্ষেত্রে একটি জিনিস মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি অনলাইন বা অফলাইনে কোনও পণ্যের জন্য সম্পূর্ণ টাকা পেমেন্ট করেন ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে তাহলে আপনি পেমেন্টে একটি ডিসকাউন্ট পাবেন। no-cost EMI হলে আপনি সেই ডিসকাউন্ট পাবেন না।

এতে, খুচরো বিক্রেতা আপনার কাছ থেকে পণ্যের সম্পূর্ণ দাম পেয়ে যায়। সেই দামের ভিত্তিতে আপনার EMI প্রস্তুত করা হয়।

আসুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝা যাক। ধরা যাক আপনি একটি ল্যাপটপ কিনছেন। যার দাম 60,000 টাকা। আপনি যখন এককালীন টাকা দেবেন, তখন একটি নির্দিষ্ট শতাংশ ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। ধরা যাক, আপনি 10 শতাংশ ডিসকাউন্ট পাবেন। তাই, 6,000 টাকা বিয়োগ করে, এখন আপনাকে 54,000 টাকা দিতে হবে। কিন্তু আপনি যদি এই ল্যাপটপটি no-cost EMI দিয়ে কেনেন, তাহলে আপনি 6,000 টাকা ডিসকাউন্ট পাবেন না। উল্টে আপনার EMI-এর 60,000 টাকার উপর ভিত্তি করেই হবে। উপরন্তু, আপনাকে সুদও দিতে হবে।

কখনও কখনও, এমনও হয় যে খুচরো বিক্রেতারা পণ্যের দামের সঙ্গে সুদ যোগ করে। তারপর আপনি নতুন দামে no-cost EMI-এর সুবিধা পাবেন। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে 60,000 টাকার ল্যাপটপের জন্য মোট 66,000 টাকা EMI দিতে হবে। তাই, একে বলা হয় no-cost EMI, কিন্তু সুদের চার্জ আপনার কাছ থেকে আগে থেকেই সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও, আপনাকে একটি প্রসেসিং ফিও দিতে হবে। এটিকে একটি ফাইল চার্জও বলা হয়। আপনাকে প্রতিটি EMI এর সঙ্গেই এই ফি দিতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্কগুলো সার্ভিস চার্জও আদায় করে। জৈন এও বলেছেন,ব্যাঙ্ক বা NBFC যেগুলি no-cost EMI অফার করে, তারা প্রসেসিং ফি দিয়ে রিকভারি করে।

no-cost EMI-এ সুবিধার জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে আরও সুদ দিতে হতে পারে। তাছাড়া, আপনি যদি সময়মতো EMI পেমেন্ট না করেন, তাহলে এটি আপনার ক্রেডিট স্কোরকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি শুধুমাত্র আপনার ঋণ নেওয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে না বরং অন্যান্য আর্থিক পণ্য যেমন বন্ধক পাওয়ার ক্ষেত্রেও অসুবিধা সৃষ্টি করবে।

আশা করি, আপনি এখন no-cost EMI-এর আসল গল্পটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাই এই উৎসবের মরসুমে বিনা খরচে EMI দিয়ে কেনাকাটা করার আগে, এই বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিন।

Published: October 26, 2023, 11:12 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App