Budget 2024: বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য অধরা, ভরসা ডিভিডেন্ডে

ভারত সরকারের ব্যাঙ্কার হল RBI। সালটা 1934 । ওই বছর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আইন অনুযায়ী RBI প্রতিষ্ঠিত হয়। RBI আইনের চতুর্থ অনুচ্ছেদের 47 ধারায় বলা আছে যে, নিজেদের ব্যবসা থেকে থেকে লাভের টাকা সরকারকে দিতে বাধ্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ফলে প্রত্যেকবার বাজেট করার সময় এই বিষয়টিকে মাথায় রাখতে হয় অর্থমন্ত্রকের কর্তাদের।

ভারতীয় ব্যাঙ্কিং শিল্পের স্বাস্থ্য বর্তমানে খুবই ভালো। অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কমেছে তেমনই বেড়েছে মুনাফার মাত্রা। আর তা এতটাই বেড়েছে যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির থেকে চলতি আর্থিক বছরে কেন্দ্রের প্রাপ্য ডিভিডেন্ট বাড়তে পারে বাজেট বরাদ্দের প্রায় 220 শতাংশ। 2023-24 সালের বাজেট প্রস্তাবে এই খাতে মাত্র 48 হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত সরকারের প্রাপ্য 1 লক্ষ 4 হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।

পয়লা ফেব্রুয়ারি পেশ করা 2024-25 সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ডিভিডেন্ট বাবদ সরকারে আয় হতে পারে 1 লক্ষ 2 হাজার কোটি টাকা।

লোকসভায় পেশ করা অন্তর্বর্তী বাজেট প্রস্তাবে 2024-25 আর্থিক বছরের সরকারের ঋণ ছাড়া মোট আয় ধরা হয়েছে 30 লক্ষ 80 হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে 1 লক্ষ 2 হাজার কোটি টাকা ডিভিডেন্ড বাবদ RBI ও অন্যান্য় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে প্রত্যাশা করছে সরকার। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ের একটা অন্যতম উৎস হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু প্রশ্ন হল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন সরকারকে এই টাকা দেয়? ডিভিডেন্ডের অঙ্কই বা স্থির হয় কীভাবে?

এটা জানতে আমাদের একটু ইতিহাসে চোখ বুলিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। ভারত সরকারের ব্যাঙ্কার হল RBI। সালটা 1934 । ওই বছর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আইন অনুযায়ী RBI প্রতিষ্ঠিত হয়। RBI আইনের চতুর্থ অনুচ্ছেদের 47 ধারায় বলা আছে যে, নিজেদের ব্যবসা থেকে থেকে লাভের টাকা সরকারকে দিতে বাধ্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ফলে প্রত্যেকবার বাজেট করার সময় এই বিষয়টিকে মাথায় রাখতে হয় অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের।

2022-23 আর্থিক বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে ডিভিডেন্ড বাবদ 39,961 কোটি টাকা কেন্দ্রীয় কোষাগারে ঢুকেছিল। 2023-24 আর্থিক বছরের জন্য এই সূত্র থেকে 48,000 কোটি টাকা প্রত্যাশা করেছিল সরকার। গত বছর পয়লা ফেব্রুয়ারি বাজেটে এমনই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন নির্মলা।

কিন্তু 2023 সালের মে মাসে আকস্মিকভাবে কেন্দ্রকে 87,416 কোটি টাকা দেয় RBI. যে কারণে সংশোধিত বাজেট বরাদ্দে চলতি আর্থিক বছরের জন্য 1 লক্ষ 4 হাজার কোটি টাকা প্রত্যাশা করছে। আর আগামী অর্থবর্ষ অর্থাৎ 2024-25 সালের জন্য সরকারের কোষাগারে ঢুকতে পারে 1 লক্ষ 2 হাজার কোটি টাকা। এমনই প্রত্যাশা নির্মলার।

আর্থিক ঘাটতি কমিয়ে আনতে মরিয়া মোদী সরকার। আগামী বছর রাজকোষ ঘাটতি GDP-র 5.1 শতাংশের মধ্যে থাকতে বলে অন্তর্বর্তী বাজেটে জানিয়েছেন নির্মলা। সেই লক্ষ্যে RBI ও রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে পাওয়া ডিভিডেন্ড সরকারের একটা বড় ভরসার জায়গা।

বিশেষত টানা পাঁচ বার বিলগ্নিকরণ থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র। এবছর Air India এবং NINL-এর পরে আর কোনও লগ্নিকরণ ঘটেনি। আর ভোটের আগে নতুন করে বিলগ্নিকরণের তোড়জোড়ের সম্ভাবনাও কম।

তথ্য বলছে, 2018 এবং 2019- এই দু’টি বছর বাদ দিলে 2010 সালের পর থেকে প্রতি বছর বিলগ্নিকরণ থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং বাস্তবে তার থেকে কম টাকা কোষাগারে ঢুকেছে।

20223-24 আর্থিক বছরের বাজেটে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে মোট 51 হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু বাস্তব ছবি সেই সংখ্যা থেকে অনেক দূরে। যে কারণে সংশোধিত হিসেবে এই সূত্র থেকে আয়ের টার্গেট কমিয়ে 30 হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আগামী বছর অর্থাৎ 2024-25 অর্থবর্ষের জন্য 50 হাজার কোটি টাকার disinvestment target রাখা হয়েছে।

এই লক্ষ্যমাত্রা কি সরকার পূরণ করতে পারবে? তা বলবে সময়।

Published: February 7, 2024, 15:25 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App