লগ্নিকারীরা দু’ধরণের পন্থা অবলম্বন করেন- অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ ফান্ড। প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট পছন্দ হলে আপনার উচিত শেয়ার, বন্ড বা কমোডিটি যে ধরনের সম্পদই হোক না কেন তাতে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করা। এতে সাধারণত ঝুঁকি খুব কম হয়। লক্ষ্য: দীর্ঘদিন ধরে সম্পদ তৈরির কাজে মন দেওয়া। অন্যদিকে, আপনি বিনিয়োগের জন্য উপদেষ্টা নিয়োগ করতে পারেন যিনি আপনাকে বিভিন্ন ধরনের শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড-সহ অন্যান্য লগ্নির ইনস্ট্রুমেন্টে লগ্নির পরামর্শ দেবেন। তবে এগুলিতে লগ্নির ব্যয় প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্টের থেকে বেশি।
স্মার্ট বিটা-ফান্ড বাজারে আসার পরে এই অবস্থার পরির্তন হয়েছে। সাম্প্রতিককালে এটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এগুলি এমনভাবে গঠিত হয় যে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের থেকে এর রিটার্ন বেশি হয়।
এখন স্মার্ট-বিটা ফান্ড সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। কোনও বিশেষ অভিষ্টের লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে চিরাচরিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের উপকারিতা যুক্ত করার জন্য তৈরি হয় স্মার্ট-বিটা ফান্ড। এর ফলে প্যাসিভ ফান্ডের কম খরচের পাশাপাশি তুলনামূলক চড়া হারে রিটার্ন পাওয়া যায় এই ধরনের ফান্ডে।
সাবেকি এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ও ইনডেক্স ফান্ডের মতো একই নীতিতে চলে স্মার্ট বিটা ফান্ড। সমস্যা একটাই, স্মার্ট বিটা ফান্ডে খরচ কিঞ্চিত বেশি। তবে বিনিয়োগকারীরা বেশি রিটার্নও আশা করতে পারেন।
প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্টে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের উপরে জোর দেওয়া হয়। কিন্তু স্মার্ট বিটা ফান্ড অন্যান্য অনেক মানদণ্ডের উপরে নির্ভর করে বিনিয়োগ করে থাকে।
১) কম অস্থিরতা, ২) মোমেন্টাম অর্থাৎ যে শেয়ায়ের বিক্রি বেশি ৩) কোয়ালিটি বা মুনাফার স্থায়িত্ব ও কম ঋণের বোঝা দেখে ব্যবসা নির্বাচন ৪) আয়তন বা ছোট মাপের ব্যবসার উপরে গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয় ৫) ডিভিডেন্ডের বৃদ্ধি, শেয়ার বাইব্যাক, নগদের জোগান, বুক ভ্যালু ইত্যাদি
স্মার্ট বিটা ফান্ডের ট্র্যাক রেকর্ড অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিন বছরের। মাত্র গোটা দুয়েক ফান্ড আছে যেগুলির পাঁচ বছরের ট্র্যাক রেকর্ড পাওয়া যায়।
গত তিন বছরে এই ফান্ডগুলি বার্ষিক ২০ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে।
এখন জেনে নেওয়া যাক স্মার্ট বিটা ফান্ডে বিনিয়োগের ঝুঁকি কতটা। চিরাচরিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের তুলনায় স্মার্ট বিটা ফান্ড অনেকের কাছে পছন্দের হাতিয়ার হলেও এর কিছু খামতি আছে। চিরাচরিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের তুলনায় স্মার্ট বিটা ফান্ডের এক্সপেন্স রেশিও বেশি। যদিও অ্যাকটিভলি ম্যানেজড ফান্ডের তুলনায় তা কম।
ভারতে স্মার্ট বিটা ফান্ডের ধারনা তুলনামূলকভাবে নতুন। যে কারণে এর বেচাকেনা কম।
এখন প্রশ্ন হল, আপনার কি স্মার্ট বিটা ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত? স্মার্ট বিটা ফান্ড নিফটির মতো বেঞ্চমার্কগুলি থেকে বেশি হারে রিটার্ন দিয়ে থাকে। অথচ এতে বিনিয়োগের খরচ অ্যাকটিভ ট্রেডেড ফান্ডের থেকে কম। স্মার্ট বিটা ফান্ড যে কোনও বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র আনে এবং এর জন্য বাজারের অস্থিরতার প্রতিফলন লগ্নিকারীর পোর্টফোলিওতে কিছুটা কমে।
চিরাচরিত ETF এবং ইনডেক্স ফান্ডের তুলনায় এগুলিতে বিনিয়োগ কিছুটা বেশি ব্যয়বহুল।
আপনি মোট লগ্নির ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ স্মার্ট বিটা ফান্ডে লগ্নি করতে পারেন। যদিও বাস্তব হল এই ফান্ডগুলি বাজারে তুলনামূলকভাবে নতুন। ফলে আপনাকে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে। কারণ এই ফান্ডগুলিকে কিছু মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনা করার মতো যথেষ্ট তথ্য এখনও পর্যন্ত আমাদের হাতে নেই।
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App