শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে সল্টলেকের বাসিন্দা পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অঙ্কিতার মুখে সম্প্রতি হাসি ফুটেছে। অঙ্কিতা ইনফোসিসের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন এবং এখন সংস্থাটি 9,300 কোটি টাকার শেয়ার বাইব্যাক ঘোষণা করেছে। এই বাইব্যাক ইনফোসিসের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এবং অঙ্কিতাও ভাল রিটার্ন পেয়েছেন।
বাইব্যাক বিষয়টি কী?
যখন একটি সংস্থা বাজারে শেয়ারের সংখ্যা কমানোর জন্য নিজেই সেই শেয়ারের কিছু অংশ কিনে নেয় তখন তাকে শেয়ার বাইব্যাক বলা হয়। এজন্য অনেক সময় কোনও কোনও সংস্থা বাজারদরের চেয়ে বেশি রেট দিয়ে থাকে। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য এটি করা হয়।
2022 সালে বাইব্যাকের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। 2022 সালেই 52টি সংস্থা 38,369 কোটি টাকার বাইব্যাক ঘোষণা করেছিল।
2021 সালে 42টি সংস্থা 14,341 কোটি টাকার বাইব্যাকের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। কিন্তু 2021 সালে সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে মোট শেয়ার বাইব্যাক হয়েছিল 13,568 কোটি টাকার। 2022 সালে 38,369 কোটি টাকার বাইব্যাক ঘোষণার প্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত 27,293 কোটি টাকার শেয়ার কেনা হয়েছে। 2022 সালে মোট বাইব্যাকের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কার্যকর হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে।
কেন 2022 সালে বেশি বাইব্যাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?
তেজিমান্ডির গবেষণা প্রধান আনমোল দাস বলেন, “লভ্যাংশ প্রদানের পরিবর্তে, শেয়ার হোল্ডারদের পুরস্কৃত করার একটি ভাল বিকল্প হল বাইব্যাক৷ যদি কোনও সংস্থার কাছে অতিরিক্ত নগদ থাকে এবং তারা অধিগ্রহণের লক্ষ্যে পরিণত হতে না চায় তাহলে প্রোমোটারেরাও তাঁদের শেয়ারের পরিমাণ বাড়াবার জন্য বাইব্যাক করে থাকে। এই বাইব্যাক শেয়ারের দাম বৃদ্ধির উদ্দেশ্যও করা হয়।
কীভাবে বাইব্যাক বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করে? বাইব্যাকে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ করা উচিত কি?
বাইব্যাকের 2টি প্রক্রিয়া আছে। একটি টেন্ডার রুট এবং আরেকটি ওপেন মার্কেট রুট।
2022 সালে বিনিয়োগকারীরা ওপেন মার্কেটের তুলনায় টেন্ডারের মাধ্যমে বাইব্যাক থেকে বেশি লাভবান হয়েছেন। তবে টেন্ডার রুটের মাধ্যমে বাইব্যাকের ক্ষেত্রে প্রকৃত রিটার্ন অ্যাকসেপটেন্স রেশিওর উপর নির্ভর করে।
অ্যাকসেপটেন্স রেশিও নির্ধারণ করে আপনার মালিকানাধীন মোট শেয়ারের মধ্যে কতগুলি টেন্ডার হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাছে একটি সংস্থার 200টি শেয়ার রয়েছে। ধরা যাক, বাইব্যাকের অ্যাকসেপটেন্স রেশিও 32 শতাংশ অর্থাৎ এক্ষেত্রে শুধুমাত্র 64টি শেয়ার টেন্ডার পদ্ধতিতে কেনা হবে।
তথ্য অনুযায়ী TCS, GAIL, MOIL, Tanla Platforms-এর মতো শেয়ারগুলি যা টেন্ডারের মাধ্যমে কেনা হয়েছিল তা 15.4 শতাংশ থেকে 73.5 শতাংশের মধ্যে রিটার্ন দিয়েছে৷
বাজাজ কনজিউমার, ইমামি, বাজাজ অটো, কাভেরি সিড, বলরামপুর চিনির মতো শেয়ারগুলিতে ওপেন মার্কেটের মাধ্যমে বাইব্যাক হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা 2.6 শতাংশ থেকে 17.5 শতাশের মধ্যে রিটার্ন পেয়েছেন। ওপেন মার্কেটের তুলনায় টেন্ডারের মাধ্যমে বাইব্যাক বেশি রিটার্ন দিয়েছে।
এই পরিসংখ্যানগুলি থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে বাইব্যাক ঘোষণার পরে বেশিরভাগ সংস্থার শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে টেন্ডার রুটের মাধ্যমে বাইব্যাক হলে তা বেশি বেড়েছে। তাই যখনই কোনও সংস্থার বাইব্যাক ঘোষণা করা হয় তখন দামের পার্থক্যের সুবিধা পেতে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App