ITR ও GST-র মধ্যে গরমিল এড়িয়ে চলুন

2019 সালের জুনে আয়কর বিভাগ এবং GST নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি 'লিঙ্ক' স্থাপনের পরে, নোটিশ পাঠানোর প্রসেস শুরু হয়েছিল।

দেশে কর ফাঁকি ঠেকাতে সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য কর্তৃপক্ষ ডেটা মাইনিং, ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। আয়কর, GST, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন দফতর এই নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। সরকার শুধুমাত্র বড় সংস্থার উপরই নয়, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসার মালিকদের উপরও নজর দিচ্ছে। কিছু ব্যবসা আছে যেগুলির টার্নওভার বেশি কিন্তু মুনাফা কম — সরকার এই ধরনের ব্যবসার উপর নজর বাড়াতে আগ্রহী।

দেশে GST প্রয়োগের মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। GST শুধুমাত্র দেশব্যাপী পণ্য ও পরিষেবার জন্য একটি অভিন্ন কর ব্যবস্থা চালু করেনি বরং কেন্দ্রীয় সরকারকে অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের করের তথ্য সংগ্রহ করার পথ সুগম করে দিয়েছে।

2019 সালে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস বা CBDT নির্দেশ জারি করার সময় একটি ঘটনা ঘটেছিল। এর ফলে আয়কর বিভাগ এবং GST অফিসাররা জিজেদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথ্য যেমন ITR ফাইলিং স্ট্যাটাস, টার্নওভার, মোট আয়, টার্নওভার রেশিও, মোট আয়ের পরিসীমা এবং কোম্পানির টার্নওভার পরিসীমা শেয়ার করতে পারে। কোনও ব্যবসা থেকে করদাতার আয় হলে তার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

2019 সালের জুনে আয়কর বিভাগ এবং GST নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি ‘লিঙ্ক’ স্থাপনের পরে, নোটিশ পাঠানোর প্রসেস শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, এটি সম্ভবত প্রথম উদাহরণ যেখানে আয়কর রিটার্ন এবং GST রিটার্নের মধ্যে একটি মিল খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেখানে অসঙ্গতি পাওয়ায় নোটিশ জারি করা হয়।

ITR এবং GST রিটার্ন মিলিয়ে দেখার ফলে কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে, যেমন GST দাবি এবং ITR ফাইলিংয়ে কম আয় দেখানো। এটি এমন ক্ষেত্রেও দেখা গেছে যেখানে ব্যবসাগুলি GST রেকর্ড অনুসারে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করছে না।

GST প্রবর্তনের আগে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের পক্ষে এই ধরনের ডেটা মিলিয়ে দেখা সম্ভব ছিল না। এর কারণ ছিল রাজ্য স্তরে বিক্রির রিটার্ন দাখিল করা হয়েছিল, যখন আয়ের রিটার্ন কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে আসে। এখন উভয় বিভাগই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পড়ে, যা কর্মকর্তাদের ডেটা সমন্বয় করা সহজ করে তোলে। কর ফাঁকি এবং ফাঁকিদাতাদের ধরতে সরকারের দুটি দপ্তর তথ্য বিশ্লেষণ করে।

যে সব ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার একটি নির্দিষ্ট সীমা ছাড়িয়ে গেছে, তাদের জন্য GST রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। যারা পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত তাঁদের জন্য এই সীমা 40 লক্ষ টাকা। পরিষেবা খাতের ব্যবসার জন্য এটি 20 লক্ষ টাকা। কিছু ক্ষেত্রে এই সীমাটি পর্যায়ক্রমে 20 লক্ষ এবং 10 লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়। টার্নওভার নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে GST রেজিস্ট্রেশন আবশ্যক হয়ে যায়। GST রেজিস্ট্রেশন ব্যবসাগুলিকে একটি GST নম্বর প্রদান করে। এতে আপনার প্যানের 10টি সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি IT বিভাগকে আপনার প্যানে রিপোর্ট করা লেনদেন সম্পর্কে তথ্য পেতে সাহায্য করে।

কর ফাঁকি দমনে করদাতার তথ্য সংগ্রহের জন্য সরকার একটি বিস্তৃত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। আপনি যদি একজন ব্যবসার মালিক হন এবং আপনার GST বা আয়কর রিটার্নে কোনও অমিল থাকে, তাহলে আপনি একটি নোটিশ পেতে পারেন। আয় গোপন করাকে কর ফাঁকি হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে এবং জরিমানা, আইনি ব্যবস্থা এবং জরিমানা ধার্য করা যেতে পারে। ITR-এ আপনার আয় সঠিকভাবে রিপোর্ট করা এবং চাপমুক্ত থাকার জন্য সেই অনুযায়ী কর প্রদান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি যদি FY23-এর জন্য ITR-এ কোনও আয় ঘোষণা করতে ভুলে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কাছে এখনও 31 ডিসেম্বর 2023 পর্যন্ত আপনার রিটার্ন সংশোধন করার সময় আছে। আপনি ফাইল করা আগের রিটার্ন সংশোধনের জন্য দুই বছর পর্যন্ত আপডেটেড রিটার্ন ফাইল করতে পারেন।

Published: December 15, 2023, 13:38 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App