নিজের মুদিখানা দোকানে বসে মাছি তাড়াচ্ছেন শিব কুমার। আগে দোকানে খদ্দেরের চাপে দু’দণ্ড জিরোনোর ফুরসত পেতেন না। আর এখন ক্রেতার অপেক্ষায় সারাদিন তাকিয়ে থাকেন।
শিব কুমারের দোকানের আশেপাশে বড়বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর গজিয়ে উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন ইনস্ট্যান্ট ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম তো আছেই। সব মিলিয়ে এখন যা অবস্থা হয়েছে তাতে শিব কুমারের দোকানে ক্রেতার সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে।
শিব কুমারের এতো টাকা নেই যে তিনি তিন-চার জন কর্মী রাখবেন, যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুদিখানার জিনিসপত্র পৌঁছে দেবেন। এছাড়া এতটা জায়গা নেই যেখানে বড় করে দোকান বানাবেন।
শিব কুমারের কাঁধে পরিবারের আরও চার জন সদস্যের ভার। ফলে নিজের এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন বেজায় দুশ্চিন্তায় তিনি।
দোকান থেকে শিব কুমারের যা আয় হয় তা দিয়েই সংসারের মাসিক খরচ চলে। এছাড়াও আছে সন্তানের পড়াশোনা, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ওষুধের খরচ। সে টাকারও সংস্থান হয় ওই দোকানের আয়ে। এখন ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তিনি কীভাবে এই সমস্ত খরচ চালাবেন! এমনই আকাশ-পাতাল ভাবছিলেন শিবকুমার। আর ততই বাড়ছিল তাঁর টেনশন।
এবছর যে লোকসভা ভোট তা শিব কুমার জানেন। আর এও শুনেছেন যে 1 ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করবেন।
এই সময় তাঁর মনে পড়ে গেল, 2019 সালে পেশ করা অন্তর্বর্তী বাজেটে কৃষকদের জন্য সরাসরি আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এবারের বাজেটেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক, চান শিব কুমার। তিনি চান, তাঁর মতো সেল্ফ-এমপ্লয়েডদের ভাগ্যে এবার শিঁকে ছিড়ুক।
শিবকুমার সরকারের থেকে এমন আশ্বাস চান যাতে তিনি অনলাইন ও বড় দোকানগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে পারেন। সরকার কম সুদে ঋণ দিলে সেই টাকায় দোকানে নতুন মাল তুলবেন।
একে বয়স বাড়ছে। সেইসঙ্গে হাজারো চিন্তা! যার ফলে দিন দিন যেন শুকিয়ে যাচ্ছেন শিব কুমার। যার ছাপ পড়েছে তাঁর শরীরেও। যতদিন শরীর চলবে ততদিন তিনি কাজ করতে পারবেন। কিন্তু তার পরে কী হবে? কে তাঁর দোকান সামলাবে? তাঁর ছেলে সবে এখন কলেজে যাচ্ছে। ফলে বৃদ্ধ বয়সে কে দেখবে শিব কুমারকে?
তাই শিব কুমার চান যে, সেল্ফ-এমপ্লয়েডদের সরকার নিশ্চিত পেনশন দেওয়া শুরু করুক।
এবারের বাজেটে সরকারের তরফে এই সমস্ত আশ্বাস দিলে শিব কুমারের মতো বহু মানুষ লাভবান হবেন।
পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App