ডার্ক প্যাটার্ন ও ব্যাঙ্ক: প্রতারণার আরেক অবতার

LocalCircles 363টি জেলায় এই সমীক্ষা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে 41 শতাংশ ব্যবহারকারী বলেছেন যে তাঁরা interface সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে৷

বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে অনলাইন জালিয়াতি শুধুমাত্র সাইবার অপরাধীরাই করে থাকে। সবসময় এমনta nao hotey parey। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন উপায়ে প্রতারিত হন। সবচেয়ে মজার বিষয় হল যারা প্রতারণা করে সবসময় বাইরের কেউ হয় না। শুধুমাত্র একজন জালিয়াতই যে আপনাকে প্রতারণা করে এমন নয়। আজকাল জালিয়াতি করার জন্য ডার্ক প্যাটার্ন ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণত বড় প্রতিষ্ঠানগুলি marketing tactics এর khetre এই ধরণের কৌশল ব্যবহার করে। আগে ই-কমার্স কোম্পানিগুলি এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করছিল। কিন্তু এখন এটি অনলাইন ব্যাঙ্কিং এবং অন্যান্য আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রেও ঘটছে। এই প্রতিবেদনে আমরা সেই তথ্যই তুলে ধরব। জানাবো কীভাবে অনলাইন ব্যাঙ্কিং স্পেসে ডার্ক প্যাটার্ন ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কীভাবে আপনি নিজেকে এর থেকে রক্ষা করতে পারেন।

ডার্ক প্যাটার্ন নিজেই এর অর্থ বোঝায়। ডার্ক বলতে বোঝায় অন্ধকারকে। প্যাটার্ন মানে কীভাবে এটি করা হয়। যখন একজন গ্রাহককে অন্ধকারে রাখা হয় এবং ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া হয় তখন এটিকে ডার্ক প্যাটার্ন বলা হয়। ই-কমার্স কোম্পানিগুলি ব্যাপকভাবে এই কৌশলটি ব্যবহার করছে। কিন্তু এখন এটি অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়েও ব্যবহার করা হচ্ছে। কখনও কখনও ঋণ দেওয়া হয় কিন্ত সুদের হার সম্পর্কে সবকিছু প্রকাশ করা হয় না। কখনও কখনও হিডেন চার্জের একটি দীর্ঘ তালিকা ইস্যু করা হলেও এটি দেখানো হয় যে সবকিছুই বিনামূল্যে। শুধু তাই নয় মানুষ obanchhito chandar ফাঁদেও পড়েন। গ্রাহকদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য এই পদ্ধতিকে বলা হয় ডার্ক প্যাটার্ন।

Consumer survey platform LocalCircles অনলাইন ব্যাঙ্কিং-এর ডার্ক প্যাটার্নগুলির উপর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। দেখা গিয়েছে প্রায় 63 শতাংশ মানুষকে অনলাইন ব্যাঙ্কিং-এ হিডেন চার্জ দিতে হয়েছে। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বোঝা যাক। ধরুন, সৌরভ 5 লক্ষ টাকার পার্সোনাল লোন নেবেন বলে ভাবছিলেন। একজন ব্যাঙ্ক এক্সিকিউটিভ তাঁকে ডেকে দ্রুত অনলাইনে আবেদন করার পরামর্শ দেন। সৌরভকে বলা হয় তিনি 11 শতাংশ সুদের হারে একটি লোন পাবেন। কিন্তু এটা বলা হয়নি যে তাঁকে বিভিন্ন শর্তে 36 শতাংশ পর্যন্ত সুদের হার দিতে হবে। সৌরভ যখন এটি বুঝতে পেরেছিলেন তখন লোন নিয়ে তার EMI দিতে শুরু করেছিলেন।

LocalCircles 363টি জেলায় এই সমীক্ষা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে 41 শতাংশ ব্যবহারকারী বলেছেন যে তাঁরা interface সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে৷ অনলাইন ব্যাঙ্কিং প্ল্যাটফর্মগুলি সেই সময়ে হস্তক্ষেপ করে যখন কনজিউমার transaction করে। তারা গ্রাহকদের additional product এবং service subscriptions বা purchases-এর জন্য চাপ দেয়। যেমন, আপনি যখন ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে ক্রেডিট কার্ড বিল শোধ করার চেষ্টা করেন তখন ব্যাঙ্ক লোন বা ক্রেডিট কার্ড আপগ্রেডের জন্য পপ-আপ বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হয়। এর মানে গ্রাহক বিল শোধের কাজটি স্বাচ্ছন্দ্যে সম্পন্ন করতে পারবেন না। এই ধরণের অবাঞ্ছিত মেসেজ বন্ধ করতে হবে। একে বলা হয় Interface Interference। অর্থাৎ আপনার উপর বিজ্ঞাপন চাপিয়ে দেওয়া hoi, আপনাকে অপ্রয়োজনীয় পরিষেবা কেনার জন্য চাপ দেওয়া hoi।

সমীক্ষায় jana geche 32 শতাংশ ব্যবহারকারীর সাবস্ক্রিপশনের ফাঁদে পড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রাহকরা যখন সহজেই একটি নতুন online product বা service-এর জন্য সাইন আপ করেন তখন subscription trap দেখা যায়। কিন্তু সেই পরিষেবার জন্য তাঁদের থেকে বারবার চার্জ করা হয়। তাঁরা চাইলেও সহজে ক্যান্সেল করতে পারেন না। এটা বন্ধ করতে হলে যেতে হবে ব্যাঙ্কের শাখায়। অতিরিক্তভাবে 39% ব্যবহারকারী Bait and Switch-এর সম্মুখীন। এর মধ্যে লোন এবং আমানতের আকর্ষণীয় সুদের হারের প্রস্তাব জড়িত। কিন্তু পরে দেখা যায় যে সুদের হার ভিন্ন। এছাড়াও অনেক হিডেন চার্জ দিতে হয়।

সরকার ধারাবাহিকভাবে ডার্ক প্যাটার্নের উপর ক্র্যাক ডাউন করছে। এটি কাজ করেনি। গত বছর RBI-এর ডেপুটি গভর্নর এম. রাজেশ্বর রাও বিভ্রান্তিকর ডিজিটাল লোন অফারে ডার্ক প্যাটার্ন ব্যবহার করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, মহার্ঘ লোন নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান সমস্যার কারণে 2023 সালে সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি বা CCPA, consumers’ rights রক্ষার জন্য একটি গ্যাজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। একে বলা হয় “Guidelines for prevention and regulation of dark patterns”। এটি সমস্ত প্ল্যাটফর্ম, বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিক্রেতাদের কভার করে যাঁরা ভারতে পণ্য এবং পরিষেবা দিয়ে থাকে।

ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ অমিত তানওয়ারের মতে, প্রায় সবাই ডার্ক প্যাটার্নের শিকার। SMS, WhatsApp messages, email বা সরাসরি ফোন কলের মাধ্যমে মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। কখনও কখনও গ্রাহকদের সস্তা ঋণের অফার দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। এইভাবে মানুষ কখনও কখনও হিডেন চার্জ দিয়ে থাকে এবং কখনও কখনও subscription trap-এ আটকে যায়। এই সমস্যাটি খুব পুরনো নয়। কারণ অনলাইন ব্যাঙ্কিং শুধুমাত্র গত দুই দশকে ভারতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একদিকে, অনলাইন ব্যাঙ্কিং, ব্যাঙ্কিংকে সহজ করেছে। অন্যদিকে এই সমস্যাগুলি প্রযুক্তির প্রতি মানুষের আস্থাও নষ্ট করার দিকে এগোচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, RBI, ব্যাঙ্ক এবং সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের আরও সক্রিয় হতে হবে। যদিও দেরি হবে তবে আশা করা যায় যে, সরকার যেভাবে ই-কমার্স কোম্পানিগুলির প্রতি কঠোর হয়েছে, এখানেও একইভাবে কঠোরতা দেখাবে।

অনলাইন ব্যাঙ্কিং-এ ডার্ক প্যাটার্ন এড়াতে ঋণের জন্য আবেদন করার সময় গ্রাহকের উচিত সমস্ত চার্জ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা। তাঁদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ঋণের প্রকৃত সুদের হার কী হবে, বার্ষিক শতাংশ হার বা APR সম্পর্কে লিখিত তথ্য চাওয়া উচিত। এতে সুদ, প্রসেসিং ফি, ইত্যাদি সহ সব ধরনের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। সমস্ত শর্তাবলী পড়ুন। অনেক সময়, শর্তাবলী সহ একটি star sign থাকে। এটিতে মনোযোগ দিন। আপনি যদি কোনও ডার্ক প্যাটার্নের শিকার হন, তাহলে আপনি এটি সম্পর্কে অভিযোগও করতে পারেন। আপনি 1915 নম্বরে ডায়াল করে ন্যাশনাল কনজিউমার হেল্পলাইনে অভিযোগ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি 8800001915 নম্বরে WhatsApp-করে অভিযোগ করতে পারেন।

Published: March 29, 2024, 14:02 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App