চড়া রিটার্ন পেতে পোর্টফোলিওতে প্রতিরক্ষা স্টক রাখতেই পারেন

গত 9 বছরে সরকার এই ক্ষেত্রে যেভাবে নীতি পরিবর্তন করেছে এবং এই খাতের জন্য বাজেটে তহবিল বরাদ্দ করেছে তা দেশকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করে তুলেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা খাতের সংস্থাগুলির শেয়ার ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় উঠছে। আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারক দেশের মর্যাদা অর্জন করা সহজ হয়নি। 2022-23 অর্থবর্ষে দেশের প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত রপ্তানি 2021-22 অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় 3,000 কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে 16,000 কোটি টাকা। 2013-14 অর্থবর্ষে এই রপ্তানির অঙ্ক ছিল 686 কোটি টাকা। দশ বছরে এই রপ্তানি প্রায় 23 গুণ বেড়েছে।
বিগত 9 বছরে দেশ থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য রপ্তানি ও আমদানির অনুপাতের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। আমদানির তুলনায় ও রপ্তানি 2013-14 সালে ছিল 35.7%, তা কমে হয়েছে 3.9%। শুধু তাই নয়, 2023 সালে দেশের মোট প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্যের উৎপাদন প্রথমবারের মতো এক লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতের সংস্থাগুলি এই সময় কীভাবে পারফর্ম করেছে এবং এখন এই সংস্থাগুলিতে লগ্নি করার জন্য কী কৌশল থাকা উচিত, আসুন বুঝে নিই।

বর্তমানে ভারতের প্রায় 100টি সংস্থা সারা বিশ্বের 85টিরও বেশি দেশে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য রপ্তানি করছে। দেশীয় প্রতিরক্ষা পণ্যগুলির চাহিদা বিশ্বজুড়েই ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল LCA-তেজস, হালকা হেলিকপ্টার, বিমানের ক্যারিয়ার এবং অন্যান্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। সরকার নিজেও প্রতিরক্ষা খাতে দেশকে আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারক হওয়ার যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতার লক্ষ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখনও পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দ্বারা পাঁচটি PLI প্রকল্প আনা হয়েছে। এই তালিকায় প্রায় 500টি পণ্য রয়েছে।

2024-25 অর্থবর্ষে বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ আগের অর্থবর্ষের চেয়ে বেশ খানিকটা বাড়ানো হয়েছে। গত বাজেটে যে পরিমাণ ছিল 5.94 লক্ষ কোটি টাকা তা এবছর বেড়ে হয়েছে 6.2 লক্ষ কোটি টাকা। এই প্রথম প্রতিরক্ষা বাজেটের অঙ্ক 6 লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এছাড়াও, প্রতিরক্ষা খাতে 1.72 লক্ষ কোটি টাকা মূলধনী ব্যয় করা হবে, যা আগের অর্থবর্ষের সংশোধিত বাজেট বরাদ্দের চেয়ে 9.4% বেশি।

গত এক দশকে ভারত সরকারের নীতি পরিবর্তন এবং নতুন উদ্যোগের কারণে, প্রতিরক্ষা খাতের সংস্থাগুলির রাজস্ব ও মুনাফা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তা প্রতিফলিত হয়েছে তাদের শেয়ারের পারফরম্যান্সে। তবে রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলি বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।

এখন, বড় প্রশ্ন হল, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং গত এক দশকে সংস্থারগুলির পারফরম্যান্স বিবেচনা করে এই খাতে বিনিয়োগের কৌশল কীভাবে তৈরি করা উচিত?

বাজার বিশেষজ্ঞ রবি সিং-এর মতে, 2014 থেকে 2023 পর্যন্ত সরকার মোট বাজেটের 10% প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করেছে। যা আমাদের দেশকে স্বনির্ভর করে তুলেছে। পাশাপাশি, PLI প্রকল্প থেকেও এই ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি উপকৃত হয়েছে। এই কারণেই বিনিয়োগকারীরা ভাল রিটার্ন পেয়েছেন। আগামী 1-2 বছরে- HAL, BHEL, Mazagon Dock, কোচিন শিপইয়ার্ড, পারস ডিফেন্স, এবং BEML-এর মতো শেয়ারগুলি থেকে 30-35% রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতএব, আপনার পোর্টফোলিওর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এই সেক্টরে লগ্নি করা উচিত।

সামগ্রিকভাবে, গত 9 বছরে সরকার এই ক্ষেত্রে যেভাবে নীতি পরিবর্তন করেছে এবং এই খাতের জন্য বাজেটে তহবিল বরাদ্দ করেছে তা দেশকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করে তুলেছে। একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত সংস্থাগুলিকে বহুলাংশে উপকৃত করেছে। পরবর্তী 1-2 বছরে এই সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ক্রমাগত বৃদ্ধির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তাই আপনার পোর্টফোলিওর কিছু অংশ প্রতিরক্ষা খাতের স্টকগুলিতে বরাদ্দ করা যেতে পারে বলেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

Published: February 22, 2024, 14:00 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App