সার কোম্পানি শেয়ার: মুনাফা হ্রাসের কারণ

যে কোম্পানিগুলির লাভ বেড়েছে তার পিছনে কারণ হল হয় সেগুলি তাদের খরচ কমিয়েছে নয় গত বছর সেই সংস্থাগুলির মুনাফা কম ছিল।

আন্তর্জাতিক সার শিল্প কোনও কোনও দেশে কেন্দ্রীভূত। নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশের বেশিরভাগ উৎপাদন মাত্র কয়েকটি দেশই নিয়ন্ত্রন করে। এই দেশগুলির যে কোনও বড় পদক্ষেপ চাহিদা এবং সরবরাহের উপর boro প্রভাব ফেলে। ফলস্বরূপ দামও পরিবর্তন হয়। শিল্পের প্রকৃতির কারণে, বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশে সারের দাম সরকার দ্বারা নির্ধারিত হয়। কারণ সার খাদ্য নিরাপত্তা এবং কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চলতি অর্থবর্ষের প্রথম 6 মাসে ভারতে সার ভর্তুকির পরিমাণ 1.12 লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সরকার পুরো বছরের জন্য 1.75 লক্ষ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে। যার মধ্যে 64.4% প্রথম 6 মাসেই খরচ করা হয়েছে। মে মাসে, মন্ত্রিসভা খরিফ বা বর্ষা মরসুমের জন্য 1.08 লক্ষ কোটি টাকার ভর্তুকি অনুমোদন করেছে। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরো বছরের জন্য আনুমানিক ভর্তুকি 2.25 লক্ষ কোটি টাকার বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর, মোট সার ভর্তুকির অঙ্ক ছিল 2.56 লক্ষ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি দামের কারণে কৃষকদের উপর যাতে বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেজন্য সরকার DAP ও ইউরিয়ার দামের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েছিল।

গত 6 মাসে দেশে আমদানিকৃত সারের গড় খরচের ভিত্তিতে মে মাসে ভর্তুকির হার নির্ধারণ করা হয়। 2022-এর ফেব্রুয়ারীতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দামের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। যদিও দাম বৃদ্ধি সরাসরি কৃষকদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে না। তবে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সার কোম্পানিগুলির আর্থিক ফলাফলে এর প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

GNFC, FACT, দীপক ফার্টিলাইজার, RCF এবং মাদ্রাজ ফার্টিলাইজারের মতো কোম্পানিগুলির বছরে 86% পর্যন্ত মুনাফা হ্রাস পেয়েছে। NFL লাভ থেকে লোকসানে পড়ে গেছে। যে কোম্পানিগুলির লাভ বেড়েছে তার পিছনে কারণ হল হয় সেগুলি তাদের খরচ কমিয়েছে নয় গত বছর সেই সংস্থাগুলির মুনাফা কম ছিল, যে কারনে এবছর বৃদ্ধির মাত্রা বেশি হয়েছে। জুয়ারি এগ্রো এবং ম্যাঙ্গালোর কেমিক্যালস গত বছরের একই ত্রৈমাসিকে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছিল। অন্যদিকে Chambal Fertilizer এর বিক্রি কম হওয়া সত্ত্বেও লাভ বাড়াতে সক্ষম হয়েছিল৷

বাজার বিশেষজ্ঞ রবি সিংয়ের পরামর্শ হল যে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল সাধারণত সার কোম্পানিগুলির জন্য ধীরগতির হয়। কারণ বেশিরভাগ কৃষক ফসল আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে জন্মানোর পরেই সার ব্যবহার করেন। প্রত্যাশা অনুযায়ী ভর্তুকি পূরণ না হওয়া, এবং geopolitical উদ্বেগের কারণে দামের হঠাৎ বৃদ্ধি হয়েছে। যার ফলে সার উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিগুলির জন্য উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। জৈব চাষের ক্রমবর্ধমান সচেতনতা এবং IFFCO-এর মাধ্যমে ন্যানো লিকুইড ইউরিয়া উৎপাদনও চাহিদাকে প্রভাবিত করেছে, কারণ জৈব চাষ রাসায়নিক কীটনাশক এবং কৃত্রিম সারের ব্যবহার এড়িয়ে চলে।

এই প্রেক্ষাপটে এই খাতে বিনিয়োগ করা উচিত হবে কিনা, সেই প্রশ্নটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রবি সিং বিশ্বাস করেন যে নির্বাচিত কোম্পানিগুলির উপর ফোকাস করে কমপক্ষে 1-1.5 বছরের পরিপ্রেক্ষিতে এই সেক্টরে শেয়ার কেনার কথা বিবেচনা করা উচিত। তাদের মধ্যে, NFL, GSFC এবং FACT কোম্পানিগুলির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলি সম্ভাব্যভাবে বার্ষিক 16% পর্যন্ত রিটার্ন অফার করতে পারে।

সামগ্রিকভাবে, সার খাতের বেশিরভাগ কোম্পানি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে খারাপ ফলাফলের সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সরকারী ভর্তুকির উপর নির্ভরশীলতার কারণে সেক্টরটির প্রতি খুব বেশি উৎসাহী নন। তাই অতি সাবধানে নির্বাচিত শেয়ারগুলিতে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ নিয়ে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

Published: December 4, 2023, 13:51 IST

পার্সোনাল ফাইনান্স বিষয়ের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ডাউনলোড করুন Money9 App